সোমবার, ১২ মে ২০২৫ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত নিয়ে কিছু কথা

ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ :   |   বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত নিয়ে কিছু কথা

বর্তমান সময়ে বিশ্বে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ ও যুদ্ধাবস্হার মত ভয়াবহ কোন সমস্যা বিরাজমান নেই। বিষয়টি নিয়ে লেখকের বেশ ক’টি লেখা সাপ্তাহিক বাংলাদেশসহ বিভিন্ন গ্রন্হে প্রকাশিত হয়েছে (দেখুনঃ সামাজিক স্তরবিন্যাস ও রাজনৈতিক মেরুকরণ; ভূর্জপত্র , মার্চ ২০২২, পৃষ্ঠা ৩০-৩২; ৫৬-৫৮)।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন রাশিয়ার ভয়ংকর গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির প্রধান থেকে উঠে এসেছেন। এই স্পাই মাষ্টার বিশ্বের শক্তিধর সব নেতাদের নাকানি চুবানি খাইয়ে সদর্পে সাম্রাজবাদের প্রথম কাতারের নেতা হিসেবে রাশিয়াকে বিভক্তি পূর্ব অবস্থানে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। সেই লক্ষ্যে ও মানসিকতায় বিশ্বজনমত উপেক্ষা করে ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখল করে নেয়।

বিশ্বে তার মিত্র বলতে চীন, সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরান ছাড়া তেমন আর কোন দেশ নেই। প্রশ্ন আসে তাহলে কিসের জোরে পুতিন এহেন শক্তিমত্তা প্রদর্শন করছেন ? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় বারের মত ক্ষমতায় আসায় পুতিনের সুবিধে হয়েছে। দু’জনের বন্ধুত্ব, পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতার মনোভাব সুবিদিত । পুতিন এ সুযোগ নিচ্ছেন চাতুর্য এবং ক্ষিপ্রতার সাথে। পুতিন ভাল করেই আঁচ করে নিয়েছেন যে পারমাণবিক মারণাস্ত্র, মহাকাশ থেকে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার পরিচালনার ক্ষমতাকে খাটো করে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকা ও অবহেলা করতে পারবে না। মিসাইল যুদ্ধ, সাইবার টেকনলজি গুপ্তভাবে ব্যবহারে ও রাশিয়ার পারজ্ঞমতা পরীক্ষিত। তাছাড়া, তেল উৎপাদনে ও রাশিয় বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্হান করছে, আমেরিকার ঠিক পরেই ।
সন্দেহাতীত ভাবে আমেরিকা বিশ্বের সর্ববৃহৎ সামরিক শক্তি। ন্যাটো ও ইউরোপের অপরাপর মিত্র দেশসমূহ ইউক্রেনে সাথে আছে এমন কথা প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিয়তই বলতেন। উল্লেখ করা যেতে পারে যে যুদ্ধে সামরিক সরঞ্জামাদি, সরাসরি অর্থসাহায্য ইত্যাদির সিংহ ভাগ বাইডেন আমলে আমেরিকাই বহন করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ইউক্রেনকে সহায়তা প্রদানে ভাটা পড়েছে।

ইরানের নিত্য সরবরাহ করা দ্রোনের সাহায্যে রাশিয়া প্রতিনিয়ত ইউক্রেনের রাজধানী ও আশেপাশে যে উপর্যুপরি বিভিন্ন ইউটিলিটির উপর আক্রমণ চালাচ্ছে তাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা সহ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চরম ক্ষতির মুখ তবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও বীর জনতা দমে যায়নি। আমেরিকা হ্রাসকৃত হারে হলে সহায়তা দিচ্ছে। হাঙ্গেরী ছাড়া ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা যথাসাধ্য সহায়তা করছে।

তিন বছরের ও বেশী সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে ও সংঘাত অবসানের কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। জেলেনেস্কী সম্প্রীতি বলেছেন যে রাশিয়া ইতোমধ্যেই এক লক্ষ সৈন্য হারিয়েছে। এই প্রচন্ড শীতে ক্ষত-ক্ষতির সংখ্যা বেডে যাবে। ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণে যে চারটি অন্চল রাশিয়া দখল করেছিল এবং জবরদস্তিমূলক গণভোট অনুষ্ঠিত করেছিল সেগুলোর মধ্যে খেরসন ও জেফুজিয়া থেকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রাশিয়ার সেনাদের হটিয়ে দিয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে ইউক্রেনের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সেনাবাহিনী গুণগত ও সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে ২২তম। রাশিয়ার ট্যান্ক ও সাজোয়া বাহিনী প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে হঠতে বাধ্য হয়েছিল। এখন যুদ্ধ চালাচ্ছে জোরজবরদস্তি করে সংগ্রহ করা বাহিনী এবং উত্তর কোরিয়া থেকে আনা সেনাদল দিয়ে। তারা তেমন প্রশিক্ষিত নয় বিধায় নামকাওয়াস্তে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা যায় আমেরিকা যে অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সরবরাহ করেছিল এসব ব্যবহার করে রাশিয়ার অগ্রগতি কিছুটা হলেও ঠেকাতে পারবে। রাশিয়ার ইরান সরবরাহকৃত দ্রোন তেমন কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছে না যদি ও ইউক্রেন প্রচুর অসুবিধেয় আছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করার দশমাস পর প্রেসিডন্ট জেলেনেস্কী প্রেসিডন্ট জো বাইডেনর আমন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসেছেন। দুই প্রেসিডন্ট এ সময় হোয়াইট হাউজে বৈঠকে বসেছেন। রাতে কংগ্রেসের সাথে আলোচনায় বসবেন। বাইডেন সবসময় বলে আসছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সাথে যতদিন প্রয়োজন থাকবে। কংগ্রেস সে সময়ে ত্বরায় ইউক্রেনকে ৬৮ বিলিয়ন ডলার দিয়েছিল সামরিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক সাহায্য হিসেবে।

আরও ৪৫ বিলিয়ন ডলার দেয়া পরবর্তিতে অস্র সরন্জামাদির জন্য ।তাছাড়া, প্রেসিডন্ট বাইডেন ঘোষণা অনুযায়ী জরুরী ভিত্তিতে ডোনেশন হিসেবে মোবাইল প্যাট্রিয়ট মিসাইল সরবরাহ করা হয়েছিল। জার্মানীতে এ মিসাইল পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণ ও দেয়া হয়েছে। এ কার্যক্রম শুরু হলে ইরানীয় দ্রোন ও অন্যান্য মিসাইল আক্রমণ ফলপ্রসূ ভাবে প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছিল বলে মনে করার সংগত কারণ ছিল বলে মনে করা হয়। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ও বসে ছিল না। জার্মানী, পোলান্ড, নরওয়ে সহ দেশগুলো ট্যান্ক, সাজোয়া যানবাহন ও পর্য্যাপ্ত গোলাবারুদ পাঠিয়েছিল বিরতিহীন ভাবে। যুদ্ধের মোড় ঘুরে গিয়েছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে এ চিত্র বদলে যেতে শুরু করে। আমেরিকার সহায়তা দান স্হিমিত হতে শুরু করলে রাশিয়ার আক্রমণের তীব্রতা বেডে যায়। ইউক্রেন রাশিয়ার অগ্রগতি প্রতিহত করার ক্ষমতা হারাতে থাকে। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধি স্হাপন ত্বরান্বিত করা জরুরী হয়ে পডে। নানা ঘাঁত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে অবশেষে ৩০ দিনের যুদ্ধ বিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

(চলবে) ২৬ মার্চ ২০২৫

Posted ৪:১৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

গল্প : দুই বোন
গল্প : দুই বোন

(7891 বার পঠিত)

স্মরণে যাতনা
স্মরণে যাতনা

(1465 বার পঠিত)

মানব পাচার কেন
মানব পাচার কেন

(1268 বার পঠিত)

আত্মঅহমিকা
আত্মঅহমিকা

(899 বার পঠিত)

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: weeklybangladesh@yahoo.com

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.